শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:১৫ অপরাহ্ন
বগুড়ার ধুনট উপজেলায় ভূমি অফিসে ৫৪ পদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে ৩৩টি পদ শূন্য রয়েছে। জনবলের চরম সংকটের কারণে অফিসের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। ফলে খাজনা-খারিজসহ ভূমিসংক্রান্ত যে কোনো কাজ করতে আসা মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
জানা গেছে, উপজেলা ভূমি অফিসে একজন সহকারী কমিশনারসহ (ভূমি, এসিল্যান্ড) মোট ১৪টি পদ রয়েছে। এখানে কর্মরত আছেন মাত্র আটজন। এর মধ্যে গুরত্বপূর্ণ সহকারী কমিশনার, সার্ভেয়ার ও কানুনগোর পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য। অথচ সরকারি জমি রক্ষার্থে প্রতিনিয়ত হাট বাজারের পেরিফেরি ও চান্দিনা ভিটি রক্ষণাবেক্ষণ, ই-নামজারি, তদন্ত প্রতিবেদন, অবৈধ দখলদার চিহ্নিতকরণ এবং তাদের উচ্ছেদের জন্য এসিল্যান্ড, কানুনগো, সার্ভেয়ার কাজ মূল দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।
উপজেলা ভূমি অফিসে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ১ জন, কানুনগো ১ জন, সার্ভেয়ার ১ জন, প্রসেস সার্ভেয়ার ২ জন, চেইনম্যান ২ জন, অফিস সহায়ক ২ জন এবং অফিস সহকারী ৫ জন থাকার কথা, সেখানে এই অফিসে মাত্র ১ জন প্রসেস সার্ভেয়ার, ১ জন চেইনম্যান, ২ জন অফিস সহকারী ও ২ জন অফিস সহায়ক রয়েছেন। এত কম জনবলের কারণে একদিকে যেমন সেবা প্রার্থীরা হয়রানির শিকার হচ্ছে, অন্যদিকে ভূমি অফিসের প্রতি মানুষের আস্থার সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। আবার সময় বেশি লাগায় সেবা প্রার্থীরা আগে কাজ পেতে নিজেরাই ঘুষ প্রদানে বাধ্য হচ্ছে।
উপজেলা ভূমি অফিস ছাড়াও ১০টি ইউনিয়ন পর্যায়ে একটি করে ভূমি অফিস রয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ১ জন করে সহকারী ভূমি কর্মকর্তা, ১ জন করে উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ও ২ জন করে অফিস সহায়ক পদ রয়েছে। অথচ ১০টি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সহকারী ভূমি কর্মকর্তার পদ শূন্য। উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ১০ জনের স্থলে আছেন ৫ জন এবং ২০ জন অফিস সহায়কের স্থলে আছেন ১০ জন। পাঁচজন উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা দিয়ে চলছে ১০ ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কাজকর্ম।
এ উপজেলায় সেবা প্রার্থীদের চাহিদার তুলনায় জনবল কম হওয়ায় কাঙ্খিত সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ভূমি অফিসকে। এর সাথে আগে থেকেই রয়েছে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবল, ইন্টারনেটের ধীরগতি এবং বিদ্যুৎ সমস্যা।
অফিসে লোকবল না থাকায় সাধারণ মানুষ সময় মত জমির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছে এলাকাবসী। ফলে তারা চিকিৎসা, ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার খরচ, বিয়ে, বিদেশ যাত্রাসহ অন্যান্য জরুরি কাজে টাকার প্রয়োজনে সময়মতো জমি বেচা-কেনা করতে পারছেন না। নামজারি, জমা, খাজনা খারিজসহ জমিজাম সংক্রান্ত জরুরি বিষয়গুলির জন্য এ অফিসে সেবা নিতে এসে ঘুরতে হচ্ছে দিনের পর দিন। এ ছাড়া একই কারণে অনেককেই পড়তে হচ্ছে বহুমুখী সংকটে।
ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্জয় কুমার মহন্ত বলেন, মূলত নামজারি বা জমা-খারিজ, জমির এলডি ট্যাক্স, মিস কেস, সরকারি খাস জমি বন্দোবস্ত ও উদ্ধারসহ সরকারি বিভিন্ন আদেশ প্রতিপালনে জনবলের কারণে খুব বেগ পেতে হচ্ছে। অফিসে জনবল সংকটের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে।